Header Ads

Header ADS

আল হাদিস হতে সূর্যগ্রহণের বর্ণনা



সহিহ বুখারী হতে সংগৃহীত সূর্যগ্রহণ সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য হাদিস বর্ণনা করা হলো:

৯৮৩। আমর ইবনু আওন (রহঃ) ... আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ছিলাম, এ সময় সুর্যগ্রহণ শুরু হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন উঠে দাঁড়ালেন এবং নিজের চাদর টানতে টানতে মসজিদে প্রবেশ করলেন এবং আমরাও প্রবেশ করলাম। তিনি আমাদেরকে নিয়ে সূর্য প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত দু’রাকাআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। এরপর তিনি বললেনঃ কারো মৃত্যুর কারণে কখনো সূর্যগ্রহণ কিংবা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। তোমরা যখন সূর্যগ্রহণ দেখবে তখন এ অবস্থা কেটে যাওয়া পর্যন্ত সালাত আদায় করবে এবং দু’আ করতে থাকবে।
৯৮৫। আসবাগ (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, কারো মৃত্যুর বা জন্মের কারণে সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ হয় না। তবে তা আল্লাহর নিদর্শন সমূহের মধ্যে দু’টি নিদর্শন। কাজেই তোমরা যখনই গ্রহণ হতে দেখবে তখনই সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে।
৯৮৭। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময় একবার সূর্যগ্রহণ হল। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। তিনি দীর্ঘ সময় কিয়াম করেন, এরপর দীর্ঘক্ষণ রুকু’ করেন। এরপর পুনরায় (সালাতে) তিনি উঠে দাঁড়ান এবং দীর্ঘ কিয়াম করেন। অবশ্য তা প্রথম কিয়াম চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। আবার তিনি রুকু’ করেন এবং এ রুকু’ দীর্ঘ করেন। তবে তা প্রথম রুকু চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। এরপর তিনি সিজদা করেন এবং সিজদাও দীর্ঘক্ষণ করেন। এরপর তিনি প্রথম রাকা’আতে যা করেছিলেন তার অনুরূপ দ্বিতীয় রাকাআতে করেন এবং যখন সূর্য প্রকাশিত হয় তখন সালাত শেষ করেন।
এরপর তিনি লোকজনের উদ্দেশ্যে খুৎবা দান করেন। প্রথমে তিনি আল্লাহর প্রশংসা ও গুণ বর্ণনা করেন। এরপর তিনি বলেনঃ সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর নিদর্শন সমুহের মধ্যে দুটি নিদর্শন। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। কাজেই যখন তোমরা তা দেখবে তখন তোমরা আল্লাহর নিকট দু’আ করবে। তাঁর মহত্ব ঘোষণা করবে এবং সালাত আদায় করবে ও সাদাকা প্রদান করবে। এরপর তিনি আরো বললেনঃ হে উম্মতে মুহাম্মদী! আল্লাহর কসম, আল্লাহর কোন বান্দা যিনা করলে কিংবা কোন নারী যিনা করলে, আল্লাহর চাইতে বেশী অপছন্দকারী কেউ নেই। হে উম্মাতে মুহাম্মদী! আল্লাহর কসম, আমি যা জানি তা যদি তোমরা জানতে তা হলে তোমরা অবশ্যই কম হাঁসতে ও বেশি কাঁদতে।
৯৮৮। ইসহাক (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময় যখন সূর্যগ্রহণ হল, তখন (সালাতে) সমবেত হওয়ার জন্য) ‘আস-সালাতু জামিয়াতুন’ বলে আহ্বান জানানো হল।
وَقَالَتْ عَائِشَةُ وَأَسْمَاءُ خَطَبَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
আয়িশা ও আসমা (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুৎবা দিচ্ছিলেন।
৯৮৯। ইয়াহইয়া ইবনু বুকাইর ও আহমাদ ইবনু সালিহ (রহঃ) ... নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবৎকালে একবার সূর্যগ্রহন হয়। তখন তিনি মসজিদে গমন করেন। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর লোকেরা তাঁর পেছনে সারিবদ্ধ হল। তিনি তাকবীর বললেন। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দীর্ঘ কিরাআত পাঠ করলেন। এরপর তাকবীর বললেন এবং দীর্ঘক্ষণ রুকু’তে থাকলেন। এরপর سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ‏ বলে দাঁড়ালেন এবং সিজদায় না গিয়েই আবার দীর্ঘক্ষন কিরাআত পাঠ করলেন। তবে তা প্রথম কিরাআতের চাইতে অল্পস্থায়ী।
তারপর তিনি ‘আল্লাহু আকবার’ বললেন এবং দীর্ঘ রুকু’ করলেন, তবে তা প্রথম রাকাআতের চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। তারপর তিনি বললেনঃ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ‏ এরপর সিজদায় গেলেন। তারপর তিনি পরবর্তী রাকাআতেও অনুরূপ করলেন এবং এভাবে চার সিজদার সাথে চার রাকআত পুর্ণ করলেন। তাঁর সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করার পূর্বেই সুর্যগ্রহণ মুক্ত হয়ে গেল।
এরপর তিনি দাঁড়িয়ে আল্লাহর যথাযোগ্য প্রশংসা করলেন এবং বললেনঃ সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ আল্লাহর নিদর্শন সমুহের মধ্যে দু’টি নিদর্শন মাত্র। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে গ্রহণ হয় না। কাজেই যখনই তোমরা গ্রহণ হতে দেখবে, তখনই ভীত হয়ে সালাতের দিকে গমন করবে।
রাবী বর্ণনা করেন, কাসীর ইবনু আব্বাস (রহঃ) বলতেন, আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) সুর্যগ্রহণ সম্পর্কে আয়িশা (রাঃ) থেকে উরওয়া (রহঃ) বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তাই আমি উরওয়াকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনার ভাই (আবদুল্লাহ ইবনু যুবাইর) তো মদিনায় যেদিন সূর্যগ্রহণ হয়েছিল, সেদিন ফজরের সালাতের ন্যায় দু’রাকাআত সালাত আদায়ের অতিরিক্ত কিছু করেননি। তিনি বললেন, তা ঠিক, তবে তিনি নিয়ম অনুসারে ভুল করেছেন।

1 comment:

Powered by Blogger.